বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ ইং         ০৬:৪৭ অপরাহ্ন
  • মেনু নির্বাচন করুন

    সোনাগাজীতে নির্ঘুম কাটাতে হয় মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে


    ফাইল ছবি
    শেয়ার করুনঃ

    বাংলাদেশের মানুষদের অর্থনৈতিক মুক্তি ও স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার অধিকার নিশ্চিত করতে ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন ফেনীর সোনাগাজীর বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.শফি উল্যাহ। দেশের মানুষদের অর্থনীতির মুক্তিও মিলেছে, সবার বেঁচে থাকার অধিকারও নিশ্চিত হয়েছে। কিন্তু শফি উল্যাহর পরিবারের সদস্যদের বেঁচে থাকার অধিকার নিশ্চিত হলেও হয়নি বাসগৃহের নিশ্চয়ন। জন্মই যেন তাদের আজন্ম পাপ। স্বাধীনতার ৪৮ বছরেও পরিবারটির বাসস্থানের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে পারেনি কোন সরকার। সরকার আসে সরকার যায়, কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা শফি উল্যাহর স্ত্রী সন্তানদের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন ঘটেনা। একটি খুঁপড়ি ঘরের মধ্যে তাদের বসবাস। বৃষ্টি এলেই ঝরঝরিয়ে পানি পড়ে একাকার হয়ে যায়। নিদারুণ কষ্টে থাকতে হয় তাদের। 


    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিটি গৃহহীন মানুষদের আবাস দেয়ার ঘোষণা দিলে বহু আশা নিয়ে বুক বেঁধেছিলেন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী আয়েশা খাতুন। সরকারি খরচে একটি ঘর পেতে ২০২০ সালের ৮মার্চ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত আবেদনও করেছিলেন তিনি। কিন্তু যথাযতভাবে  তদ্বির না হওয়ায় ১৬ লাখ টাকা খরচে সদ্য তালিকাভুক্ত ৩৪টি ঘরের তালিকায় ঠাঁই হয়নি আয়েশার। এর আগে গৃহহীন মানুষদের গৃহনির্মাণ প্রকল্পের 'ক' তালিকায়ও স্থান হয়নি তার। পরবর্তীতে  জায়গা আছে ঘর নেই এমন তালিকা থেকে বাদ পড়েন আয়েশা। উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়নের চরসাহাভিকারী গ্রামের আশকার কামলা বাড়ির মুক্তিযোদ্ধা মো. শফি উল্যাহ।

    তিনি স্ত্রী, দুই পুত্র ও এক কন্যা সন্তান রেখে মৃত্যুবরণ করেন। আয়েশা খাতুন দুই ছেলে এক কন্যা সন্তান নিয়ে সাড়ে সাত শতক জমির উপর বসবাস করে আসছেন। মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দিলেও দুই ছেলের অবস্থা নূন আনতে পান্তা পূরায়।  দুই পুত্র পেশায় অটো রিক্সা চালক। মৃত মুক্তিযোদ্ধা শফি উল্যাহ আমৃত্যু সোনাগাজী সদর ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ হিসবে কর্মরত ছিলেন।


    খুঁপড়ি ঘরের মধ্যে চরম মানবেতর জীবন যাপনকারী আয়েশা খাতুন জানান, রাতে বৃষ্টি হলেই রাত জেগে বসে বসে নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়। তার কোন তদ্বিরকারক না থাকায় তিনি সন্তানদের নিয়ে বসবাসের আবাসটুকু পাচ্ছেননা। দীর্ঘ প্রায় ৭মাস পূর্বে আবেদন করেও তিনি ঘর পাননি। তিনি মাথাগুজার ঠাঁই হিসেবে একটি ঘর পেতে মানবতার নেত্রি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

    এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অজিত দেব জানান, 'খ'' তালিকায় তালিকাভুক্তির জন্য এলাকায় ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়েছিল। তারা যোগাযোগ না করায় তালিকা করা সম্ভব হয়নি। সোনাগাজী উপজেলা থেকে ৫হাজার ঘরের চাহিদা চেয়ে তালিকা প্রেরণ করা হয়েছে। সম্প্রতি আরো ৩৪জন অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধার ঘর নির্মাণের জন্য তালিকা প্রেরণ করা হয়েছে। আগামীতে ওই পরিবারকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেয়ার চেষ্টা করা হবে।



    আপনার মন্তব্য লিখুন
    © 2024 chhagalnaiya.com All Right Reserved.