ঘুম চোখে বেপরোয়াভাবে কাভার্ড ভ্যান চালাচ্ছিলেন চালক। অবশেষে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চাপা দিল পিকআপ-বেকারী পণ্যবাহী ভ্যান-অটোরিকশাকে। ঘটনাস্থলে ঝরে যায় ২ প্রাণ। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থান প্রাণ যায় অন্য আরেকজনের। নিহতরা হল মিরসরাই পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ও পিকআপ ভ্যান চালক শহিদুল ইসলামের ছেলে ইকবাল হোসেন (৪০) ও একই এলাকার বখতিয়ার খানের ছেলে কাজী বেকারির বিক্রেতা শেখ ফরিদ (৪২)। হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান একই এলাকার সৈয়দুল হকের ছেলে শহিদুল ইসলাম (৩৮)। নিহতরা মিরসরাই পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের মধ্যম তালবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সুফিয়া রোড এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন মিরসরাই পৌরসভার মধ্যম তালবাড়িয়া এলাকার আমিনুল হকের ছেলে মিজানুর রহমান।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সুফিয়া রোড এলাকায় মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা গাছবোঝাই একটি পিকআপ ভ্যান ও কাজী বেকারির পণ্য বহনকারী একটি ব্যাটারিচালিত ভ্যান ও অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয় চট্টগ্রামমুখী কাভার্ড ভ্যান। এসময় ব্যাটারিচালিত ভ্যান, পিকআপ ভ্যান ও অটোরিকশাটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই দুই জন নিহত হন। আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরো এক জন মারা যান।
সরেজমিনে নিহত শহীদুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় তার স্ত্রী মেয়েকে জড়িয়ে ধরে আহাজারি করছিলেন এবং বলছিলেন আজ থেকে কাকে বাবা ডাকবে, কে তোদের দেখবে। এভাবে কেন চলে গেলারে তুমি।’ এসময় তার আহাজারি দেখে উপস্থিত কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি। শুধু শহীদুল নয়, ফরিদ ও ইকবালের স্বজনদের আহজারীতে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠছে। পরিবারের একমাত্র উপার্জন মানুষদের হারিয়ে তাদের সামনে এখন ঘোর অন্ধকার।
তালবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা অভি রায় বলেন, আমাদের গ্রামের ৩ জন একসাথে এভাবে চলে গেল, ভাবতে খুব কষ্ট হচ্ছে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারীকে হারিয়ে কিভাবে সংসার চলবে বুঝতেছিনা। কাভার্ড ভ্যান চালক চোখে ঘুম নিয়ে গাড়ি চালানোর কারণে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে।
জোরারগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশের ইনচার্জ সোহেল সরকার জানান, মঙ্গলবার সকালে সুফিয়া রোড় এলাকায় দ্রুতগামী একটি কাভার্ড ভ্যান সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা পিকআপ ও ভ্যান গাড়িকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলে ২ জন মারা যায়। পরে শুনতে পাই চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরো একজন মারা যায়। চালক চোখে ঘুম নিয়ে গাড়ি চালানোয় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে। কাভার্ড ভ্যান চালককে আটক করা হয়েছে। নিহতদের মরদেহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে পরিবারের কাছে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
https://youtu.be/N4eQbAECXyY?si=c5riIZHgg1XjA3LB