মিরসরাইয়ে এক তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার দিনভর মিরসরাই ও সীতাকুন্ড উপজেলার
বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হল সীতাকুন্ড উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের মোজাম্মেল হোসেনের পুত্র নিজাম উদ্দিন রানা, মাহমুদাবাদ গ্রামের দুলালের পুত্র আশরাফুল ইসলাম, বাঁশবাড়িয়া গ্রামের ইয়াছিনের পুত্র শাহাদাত হোসেন, শিবপুর গ্রামের ছালামত উল্যাহর পুত্র ইসমাইল, মিরসরাইয়ের মধ্যম কুরুয়া গ্রামের নুর নবীর পুত্র বেলাল হোসেন ও একই গ্রামের জিয়াউল হোসেনের পুত্র সাগর। তাদের গ্রেপ্তারের আগে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১ টায় ভুক্তভোগী তরুণী (২২) বাদী হয়ে ৯ জনকে আসামি
করে মিরসরাই থানায় একটি মামলা করেন। তম্মধ্যে ঘটনার সাথে জড়িত ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে ৩ জন বাসের স্টাফ , একজন দালাল ও অন্যরা ছিনতাইকারী। গ্রেপ্তারকৃতদের শনিবার (২৬ জুন) চট্টগ্রাম জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
মিরসরাই থানায় দায়েরকৃত মামলা সূত্রে জানা যায়, ওই তরুণীর বাড়ি নীলফামারী জেলায়। পোশাক কারখানার শ্রমিক হিসেবে কাজের সূত্রে
সে চট্টগ্রাম থাকে। গত বুধবার (২৩ জুন) বিকেলে কারখানার ছুটি হলে চট্টগ্রাম নগরীর অলংকার মোড় থেকে পরিচিত ‘সীতাকুন্ডের চাকা
পরিবহণ’র মিনিবাস চালক আশরাফুল ইসলাম তার গাড়িতে তুলে তাকে সীতাকুন্ড উপজেলার দিকে নিয়ে আসে। এসময় সীতাকুন্ড এলাকার
হাফিজ জুট মিলের সামনে বাসের সব যাত্রী নামিয়ে দিয়ে চালক আশরাফুল ও বাসের সহকারী শাহাদাত হোসেন তাকে বাসের মধ্যে ধর্ষণ
করে। ধর্ষণের পর রাতে তাকে সীতাকুন্ড নামিয়ে দেয়। এ সময় চাকরি সূত্রে ওই তরুণীর পূর্বপরিচিত রায়হান উদ্দিন রানা নামে একজনের
কাছে ফোনে সাহায্য চায়। রাতে রায়হানসহ আরও কয়েকজন মিলে ওই তরুণীকে উদ্ধার করে তার কাছ থেকে নগদ ২ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন নিয়ে নেয়। পরে তাকে আরেকটি মিনিবাসে তুলে মিরসরাই উপজেলার সাহেরখালী ইউনিয়নের ডোমখালী বেড়িবাঁধ এলাকায় নিয়ে রাতভর ধর্ষণ করে তারা চলে যায়। পরে বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয়দের সহযোগীতায় সীতাকুন্ড থানায় গিয়ে পুলিশের সহযোগিতা চাইলে তারা তাকে মিরসরাই থানায় পাঠায়। এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে ওই তরুণী বাদী হয়ে মিরসরাই থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মিরসরাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মজিবুর রহমান জানান, মামলার পর মিরসরাই ও সীতাকুন্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুইটি
মিনিবাস জব্দসহ অভিযুক্ত ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের শনিবার চট্টগ্রাম জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
ভিকটিম ওই তরুণীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরো ৩ জনকে
গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।